পোস্টগুলি

আমার সংসার আমার সুখ

ছানাটা এখনো কথা বলতে পারেনা ঠিক করে। সবে মাত্র মা ডাক দিতে শিখেছে। ওর মায়ের কাছে গিয়েও মা বলে, আবার আমার কাছে এসেও মা বলে। ছড়াগান শুনে নাচের ভঙ্গিতে হাত পা নাড়ে। ওর চোখ মুখ দেখলে বুঝতে পারে কখন কি লাগবে, কখন কি অসুবিধা হলো। ছোটখাটো ব্যাথায় খুব একটা কান্না করে না। দুই ঠোট বাঁকিয়ে ওহ ওহ করে শুধু। ছানাটা চোখের সামনে বেড়ে উঠছে একটু একটু করে। মুচকি হাসি, খিলখিল করে হাসি..... নানান ভঙ্গিমায় সাড়া দেয় সব কিছুতেই। ছানাটাকে ঘিরে স্বপ্নের হাজারো জাল বুনি। মেতে থাকি আনন্দ আর সুখের আবেশে। কোথাও যাবার জন্য তৈরি হচ্ছি দেখলে ছানাটা আর পিছু ছাড়ানে। দুই হাত উপরে তুলে কোলে উঠার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কোলে না উঠানো পর্যন্ত ছানাটা থামে না। এই সময়টাতে ও আর কারো কাছে যেতে চায় না। ওর মায়ের কাছেও না। আমি যেখানেই যাই ও সাথে যাবেই। ওর চোখ মুখে আবদারের চাহনি। মায়া মায়া দৃষ্টি নিয়ে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। যেন বলতে চায়, "বাবা, আমাকে রেখে যেও না কিন্তু। আমিও তোমার সাথে যাবো"। মুখ দিয়ে শব্দ উচ্চারণ করতে না পারলে কি হবে, ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমি সব পড়ে ফেলি। ছানাটা সব বুঝিয়ে দেয় ওর দৃষ্টি আর হাসি মাখা চাহনি

আমাদের সন্তান আমাদের স্বপ্ন-০১

ছবি
    একটি সন্তান একটি স্বপ্নের মতো। ছোট থেকে আস্তে আস্তে বেড়ে উঠার প্রতিটি মুহুর্তের সাক্ষী আমি। বীজের অঙ্কুরোদগম থেকে শুরু করে একটি কুঁড়ি আর দুটি পাতার ছোট্ট চারাগাছ হওয়া, সেখান থেকে ডালপালা গজানো আর মৃদু বাতাসের সাথে সাড়া দিয়ে হেলে দুলে উঠার মতো করে ছোট ভ্রুণটিও বেড়ে উঠে। মাতৃগর্ভে একটু একটু করে বেড়ে উঠে স্বপ্নের সন্তান। ছানাটির মা-ই যে নিজের রক্ত মাংস দিয়ে বড় করছে ছানাটিকে! আর তাইতো ছানাটির অস্তিত্ব সবার আগে ওর মা-ই টের পায়। বিয়ের পাঁচ বছর পর করুনাময়ের ইচ্ছায় আমাদের প্রথম সন্তান হয়। ফোন করে সে খবর আমার কানে দিতে একটুও বিলম্ব করে না আয়েশা। একটু আগেও যেখানে আমাদের পরিচয় ছিলো শুধু আমাদের নাম, সেখানে আমরা একে অপরকে বাবুর আব্বু-বাবুর আম্মু বলে পরিচয় দিচ্ছি। অনাগত সন্তানকে ঘিরে আমাদের গল্প এগিয়ে চলে। ছোট ছোট মিষ্টি মধুর ঝগড়া আর নানান খুনসুটি চলে অনাগত ভবিষ্যতের কল্পনায়। ছেলে হবে নাকি মেয়ে সে নিয়েও কথা হয় আমাদের মাঝে। ছেলে মেয়ের নাম ঠিক করা, ওর জন্য জুতো আর জামা কেনা আর জামা-কাপড় রাখার জন্য ছোট্ট একটা আলমারি কেনার তাড়া আসে আয়েশার থেকে। শীতের জামা কাপড় লাগবে বলে আমি সেই গল্পের ম

কল্পলোকের রাজকন্যা

ছবি
      মনিকে যেদিন প্রথম দেখি সেদিনই ওকে ভালো লেগে যায়। ওর মুখটা কেমন হবে জানা ছিলো না। বোরকার ভেতর থেকে মুখের গঠন না দেখা গেলেও কল্পনায় মায়াবী এক গঠন দাঁড় করিয়ে নেয় আমার সরল মন। মনের উপর আমার শতভাগ আস্থা আর বিশ্বাস ছিলো। ও দেখতে যেমনই হোক, আমাকে যে ভালোবাসতে পারবে এ ব্যাপারে আমি একশতে একশো দশ ভাগ নিশ্চিত ছিলাম। আমার সে বিশ্বাসের কারনও আছে নিশ্চয়! বোরকার ফাঁক গলে কাজল মাখা শীতল দুটি চোখ আর বরফের মতো মসৃন হাতের আঙ্গুলগুলো আমার বিশ্বাসের কঠোর অবস্থানে থাকতে বাধ্য করেছিলো। আর সেল ফোনের ওপাশ থেকে "হ্যালো, কেমন আছেন" শুনে শব্দের যে ঝংকার আমার কানে এসে লেগেছিলো সেই শব্দের সৌন্দর্য্য আজো কানে বাজে। আহা! কি মধুর সেই সৌন্দর্য্য! শুধু মনে হতো আর কিছু চাইনা, মনির হাত দুটি যদি একবার ধরতে পারি, একবার যদি আঙ্গুলে বন্ধি করতে পারি ওর আঙ্গুলগুলোকে আর কিছু চাই না আমি। আমি হেটে চলবো সহস্র ক্রোশ পথ, পারি দেবো দূর্গম কোন পাহাড়ি রাস্তা। জয় করে নেবো কেওক্রাডং আর বিজয় পর্বতকেও মুহুর্তে। আমি হিমালয় জয় করার স্বপ্ন দেখিনি কখনো। কারণ, মনির অন্তরের মাঝে ঠাঁই হলে ও সব আমার কাছে ছেলে খেলা বৈঁ

আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে

ছবি
      চাকরির সুবাদে বাসা থেকে দূরে থাকতে হয়। সপ্তাহে একদিন বাসায় যাবার সুযোগ মেলে। বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে বাসায় যাই আবার শনিবার সকালে এসে অফিস করি। সপ্তাহের যে কয়টা দিন বাসার বাইরে থাকি সে সময়টাতে মোবাইলে কথা হয় ছেলেটার সাথে। বয়স পাঁচ বছর হলেও বেশ সুন্দর আর গুছিয়ে কথা বলতে পারে ও। ফোন করেই সবার প্রথমে যে প্রশ্নটা করবে সেটা হলো বাবা কখন আসবা? শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার, পুরো সপ্তাহ জুড়েই ওর এই একই প্রশ্ন। ছানাটার মাও চাকরি করে। ছানাটা আমার ঠিকমতো বাবা-মার সংস্পর্শ পায় না। সারা সপ্তাহ অপেক্ষা করে বাবার জন্য। বাবার কাছে হাজারটা বায়না ওর। মাঝে মাঝে ধমকও দেয় ওর মা। আমি নিষেধ করি কাছে থাকলে। ছানাটার মা ছানাটাকে বুঝায় এত বেশি আবধার করো বলে বাবা আসে না। আর বেশি কিছু চাবা না। ছোট মানুষ, মা যা বুঝায় তাই বুঝে। অযথা কান্নাকাটিও করেনা তেমন। আমাকে ফোন দিয়ে বলে বাবা বাবা আমি আ....র তোমার কাছে কিছু চাইবো না। শুধু আমার জন্য চকলেট নিয়ে আইসো। মা বলেছে বেশি বেশি আবধার করি বলে তুমি আমার সাথে থাকো না। চকলেট চাওয়া কি বেশি কিছু চাওয়া হবে বাবা? তাহলে চকলেটও চাইনা। তুমি তাড়াতাড়ি আসো বাবা। আমি ওর কথা

একজন বাবা বলছি

ছবি
  আপনার ছোট সন্তান যখন আপনার কোলে পেশাব করে দেয় তখন কি করেন? নিশ্চয় চিল্লাচিল্লি শুরু করে দেন! কিংবা কোল থেকে/খাট থেকে পেশাব করা অবস্থায়ই নামিয়ে দেন। ফলাফল পেশাবটা আর ঠিকমতো করে না বচ্চাটা! আমি কিন্তু এমনটা কখনোই করি না। বাচ্চাকে কোলে নেয়া অবস্থায় যখন বুঝতে পারি ও পেশাব করছে আমি চুপ থাকি। ছেলেটাকে ভালোমতো পেশাব করতে দেই। খাটের উপর যখন ও পেশাব করতে নেয় তখনো ওকে তড়িঘড়ি করে নামাই না। কাছে থাকলে নিচে হাত পেতে পেশাব ধরে রাখি পানির মতো করে। তারপর ফেলে দেই বাথরুমে। একবার এক অমুসলিম মসজিদে নববীতে পেশাব করতে বসে। সে দৃশ্য দেখে রাসূল (সা.)-এর সাথে থাকা সাহাবীরা ঐ লোকটিকে তাড়িয়ে দিতে উদ্ধত হয়। রাসূল সা. সাহাবীদেরকে থামিয়ে দিলেন। বললেন, "তাকে পেশাব করতে দাও!" বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণা করে দেখেছে যে পেশাব করা অবস্থায় যদি কাউকে থামিয়ে দেয়া হয় তাহলে মূত্রথলিতে ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা থাকে। আর সেটা যদি হয় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তাহলে তো আরো বিপদ হতে পারে। এই গরমে বাচ্চাকে সব সময় ডায়াপার পড়ানো সম্ভব হয়ে উঠে না। বাচ্চার কষ্ট হবে ভেবে আমরা শুধু রাতেই বাচ্চাকে ডায়াপার পড়াই। বাচ্চার